History of Homeopathic Medicine হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ইতিহাস
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস জানার আগে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস বা সংজ্ঞা জানা দরকার:
চিকিৎসা বিজ্ঞানের সংজ্ঞা- রোগীর চিকিৎসা ও শারীরিক স্বাস্থ্য রক্ষার উদ্দেশে নির্দষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে রোগ, রোগ প্রতিরোধ, রোগের চিকিৎসা, ঔষধ প্রয়োগ পদ্ধতি, রোগ নিরাময় হয়ে পূর্বের সুস্বাস্থে ফিরে আসা ইত্যাদি সম্বন্ধে যে বিজ্ঞান ভিত্তিক আলোচনা, পর্যালোচনা ও গবেষণা এবং এসব সম্পর্কিত বিধিবদ্ধ জ্ঞান অর্জন করা হয়, তাকে চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে।(History of Homeopathic Medicine)
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ইতিহাস
জন্মের সঙ্গে যেমন মৃত্যুর সম্পর্ক ঠিক তেমনি জীবিত দেহের সাথে রোগের সুগভীর সম্পর্ক রয়েছে। সৃষ্টির আদিকাল থেকেই মানুষের শরীরকে রোগমুক্ত রাখার প্রাণপণ প্রয়াস চালিয়ে আসছিলো এবং এখনও চালাচ্ছে। তবে কখন ও কোথা থেকে চিকিৎসা বিদ্যার গোড়াপত্তন হয়েছিল তা সঠিক ভাবে অজানা হলেও ইতিহাস বিদ ও বিজ্ঞানীরা পর্যায়ক্রমে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছেন।
খ্রিস্টপূর্ব প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সূত্রপাত হয়েছে বলে ইতিহাসবিদ ও বিজ্ঞানীরা মনে করেন। ভারতবর্ষের সিন্ধু ও গঙ্গা অববাহিকায়, মিসরের নীল নদের অববাহিকায় সুমেরীয়, মেসোপটেমিয়ায় এবং ব্যাবিলনের ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রীস নদীর (দজলা ও ফোরাত নদীর) অববাহিকায়, আবার অন্যদিকে চীন, জাপান ও পেরুতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আদিম বৃত্তিমূলক গড়ে উঠেছিল। আরবীয় চিকিৎসা বিজ্ঞান মিসরের, ভারত ও ইউরোপের চিকিৎসা বিজ্ঞানের মধ্যে সেতু বন্ধন সৃষ্টি করেছে। (History of Homeopathic Medicine)
আবার ভারত, মিসর, ব্যাবিলন ও মেসোপটেমিয়ার চিকিৎসা বিজ্ঞান সৃষ্টি করেছে গ্রীক ও রোমান চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভিত্তি। মেসোপটেমিয়ার চিকিৎসা বিজ্ঞান হেকিমী অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম প্রবর্তনের পরের আরব্য চিকিৎসার ও ভিত্তি রচনা করেছে। (History of Homeopathic Medicine)
অতএব, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের উৎপত্তি আরব, মেসোপটেমিয়া , গ্রীক ও মধ্যযুগের চিকিৎসা বিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ইতিহাস)
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসকে মোটামুটি নিম্নোক্ত শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা-
- প্রাগৈতিহাসিক যুগের
- ঐতিহাসিক যুগ
- বিজ্ঞানমুখী যুগ
- বৈজ্ঞানিক যুগ
- আধুনিক বিজ্ঞানের স্বর্ণযুগ
প্রাগৈতিহাসিক ঃ প্রাগৈতিহাসিক যুগ ছিলো কুসংস্কার পূর্ণ। তখনকার সময় মনে করা হতো ভূত-প্রকৃত, দৈত্য-দানব প্রভৃতি অশরীরী শক্তির প্রভাবেই রোগ সৃষ্টি হয়। তাই মূলত: ধর্ম যাজকরাই ঝাড়-ফুক, তন্ত্রমন্ত্র, তাবিজ, কবজ, মাদুলী ইত্যাদি দিয়েই চিকিৎসা চালাতেন।
চিকিৎসা বিদ্যার ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, প্রাচীন সুমেরীয়, ব্যাবিলনীয়,আর্য পূর্ব ভারতীয় ও মিসরীয় সভ্যতার যোগে চিকিৎসা পদ্ধতির ক্রমবিকাশ ঘটে। ব্যাবিলনীয় সভ্যতার প্রথম থেকেই পেশাগত চিকিৎসার উন্মেষ ঘটে। পাথরের গায়ে ও পাথরের থামে খোদাই করা চিকিৎসাশাস্ত্র সে যুগের চিকিৎসার উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করেছে।
প্রাচীন ভারতীয় শল্য চিকিৎসায় দেহ থেকে পাথর বের করার মতো আধুনিক অস্ত্রোপাচার হত।
ঐতিহাসিক যুগ ঃ ঐতিহাসিক যুগের চিকিৎসাকে নিম্নের কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
- হিপোক্রেটিস যুগের চিকিৎসা।
- প্ল্যাটোর যুগের চিকিৎসা।
- অ্যারিষ্টটলের যুগের চিকিৎসা।
- গ্যালেনের যুগের চিকিৎসা।
- ভারতীয় চিকিৎসা।
- আরব্য চিকিৎসা (ইবনে সেনা,আলরাজী ইত্যাদি)।
- প্যারাসেলসাসের যুগের চিকিৎসা।
- মেসমারের যুগের চিকিৎসা।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানী হোমিওপ্যাথি উদ্ভাবন করেন 1796 খ্রিস্টাব্দে মহাত্মা ডা: হ্যানিম্যান। হোমিওপ্যাথির উৎস ও উৎপত্তি কারণ হলো প্রচলিত অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির কুফল, ব্যর্থতা ও পাশ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে। তাই তিনি 1805 খ্রিস্টাব্দে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পূর্ণভাবে বর্জন করে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা আরাম্ভ করেন ।
0 Comments