Ad Code

Responsive Advertisement

আর্ণিকা মন্টেনা ( ARNICA MONTANA )

“আর্ণিকা মন্ট” এটি একটি হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন 




নিচে আর্ণিকা মন্ট ঔষধটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ-

আর্ণিকা মন্ট ঔষধের উৎসঃ-

আর্ণিকা মন্ট ঔষধটির উৎস হচ্ছে-উদ্ভিজ।

আর্ণিকা মন্টের উদ্ভিদের/গাছের জন্মস্থান/প্রাপ্তিস্থানঃ-

উলফস বেন ‍নামক উদ্ভিদ বা গাছড়াটি  উত্তর গোলার্ধের অর্থাৎ  রাশিয়া, সাইবেরিয়ার শীতলতম স্থানে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার উত্তর পশ্চীম অংশে  এবং শীতল বা পাহাড়ি অঞ্চলে ইহা জন্মে। মধ্য ও উত্তর ইউরােপের ঠান্ডা অঞ্চলের জলা ভূমিতে ও মধ্য ইউরোপের পার্বত্য অঞ্চলের উচ্চ ভূমিতে এই গাছটির জন্ম।( ARNICA MONTANA )

আর্ণিকা গাছের বা উদ্ভিদের বর্ণনাঃ-

লেপার্ডস বেন নামক  এক প্রকার বহু বর্ষজীবি  বিষাক্ত গুল্ম গাছড়া । ইহার শিকর হালকা সুগন্ধ যুক্ত । এই গাছড়া বা উদ্ভিদটি ২ থেকে ৩ ফুট লম্বা হয়। পাতা গুলি আড়া আড়ি ভাবে থাকে  এবং দের থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা হয় । তা ছাড়া পাতা গুলি দেখতে ভেড়ার পশমের মতো । গাছটির সমস্ত অংশ ভেড়ার মতো লুমে আবৃত থাকে । জুলাই থেকে আগষ্ট মাসে হলুদ বর্ণের অনেক ফুল ফোটে। এসকল ফুলের দল পাঁচটি বিস্তৃত দাঁতের ন্যায় ছড়ানো ও নলাকৃতি বিশিষ্ট। সমস্ত গাছে ফুল ফোটলে মূল, পাতা, শিকরসহ সম্পূর্ণ বিষাক্ত গাছড়া বা উদ্ভিদটি খুব সাবধানে সংগ্রহ করা হয়। এই সম্পূর্ণ টাটকা গাছড়া বা উদ্ভিদ টি ঔষধ তৈরীতে ব্যবহার করা হয়। ( ARNICA MONTANA )


 আর্ণিকা মন্টের সমনাম বা প্রতিনাম বা অন্যান্য নামঃ-

প্যানেসিয়া ল্যাপথোরাম , ক্রাইসান থেমাম ল্যাটিফলিয়াম , ক্যালথা আলপিনা । ইংরেজি ভাষায় ঃ- উলফস বেন ( Wolf"s Bane ) বা বাঘ মারার বিষ , লেপার্ডস বেন ( Leoparad Bane ) বা চিতা বাঘ মারার বিষ , লিউপাউ , সেলটিক নার্ভ , মাউন্টেন আর্ণিকা ( Mountian Arnica ) , মাউন্টেন ট্যাব্যাকো, পর্বতের আর্ণিকা এবং পর্বতের তামাক গাছ  ইত্যাদি।( ARNICA MONTANA )

আর্ণিকা নামটি যে জায়গাথেকে নেওয়া হয়েছেঃ-

আর্ণিকা মন্টের গাছের বা উদ্ভিদটির পাতাগুলি দেখতে ভেড়ার পশমের মতো, এমন কি গাছটির সমস্ত অংশই ভেড়ার লোমের মতো আবৃত বলেই আর্ণাকিস (Arnakis) নামক ভেড়ার চামড়ার অনুরূপ বলে ইহার নাম অনুসারে এই উদ্ভিদের নাম এবং ঔষধটির নাম ও আর্ণিকা দেওয়া হয়েছে। 

আর্ণিকা মন্টের ঔষধের প্রুভারঃ-

মহাত্মা ডাক্তার স্যামুয়েল হ্যানিম্যান 1805 সালে সর্বপ্রথম আর্ণিকা মন্ট ঔষধটি প্রূভ করেন। 

আর্ণিকা মন্ট ঔষধটির প্রস্তুত প্রণালীঃ-

উলফস বেন গাছড়াটিতে বা উদ্ভিদটির ফুল ফোটলে তাজা বা সতেজ মূল, পাতা, পুষ্প, কান্ড অর্থাৎ সম্পূর্ণ বা সমস্ত গাছটি খুব সাবধানে সংগ্রহ করে গাছের বা উদ্ভিদের ওজনের দ্বিগুণ পরিমাণ বিশুদ্ধ সুরাসার সহযোগে মূল আরক বা অরিষ্ট মাদার টিংচার প্রস্তুত করা হয়। হোমিওপ্যাথিক ফার্মাকোপিয়ার নিয়ম অনুসারে এক ভাগ অরিষ্ট, দুই ভাগ পরিস্রুত পানি এবং ছয় ভাগ বিশুদ্ধ সুরাসার দিয়ে 1x শক্তির আর্ণিকা মন্ট তৈরী করতে হয়। পরে হোমিওপ্যাথিক ফার্মাকোপিয়ার নিয়ম অনুসারে 3x এবং উচ্চ শক্তির আর্ণিকা মন্ট তৈরীতে শুধুমাত্র পরিস্রুত বা বিশুদ্ধ সুরাসার ব্যবহার করা হয়। ( ARNICA MONTANA )

আর্ণিকা মন্ট ঔষধটির প্রস্তুতের ফর্মূলাঃ-

আর্ণিকা মন্ট ঔষধটির প্রস্তুতের ফর্মূলা হচ্ছে- এফ-৩(আমেরিকা), কিন্তু জার্মানী- এফ-৪(F-4)।

আর্ণিকা মন্টের প্রধান ক্রিয়াস্থান বা ক্রিয়াস্থলঃ-

মাংসপেশী, রক্তনালী, রক্তের উপর আর্ণিকা মন্টের প্রধান ক্রিয়া। আঘাত লাগা, পরে যাওয়া, মচকে যাওয়া ইত্যাদি কারণে ব্যথা বেদনা বা কোন রোগ হলে, বহুদিন পূর্বে আঘাত জনিত কোন রোগ হলে এবং প্রহারে জর্জরিতের মত দেহের প্রতিটি অংশের বেদনায় আর্ণিকা ক্রিয়া করে থাকে। 

আর্ণিকা মন্টের ধাতুগত লক্ষণঃ-

  1. আর্ণিকা মন্টের রোগীরা শীতকাতর ও সোরা ধাতুগ্রস্থ।
  2. যাহারা হ্রষ্টপুষ্ট, বলিষ্ঠ ও স্থুলকায় এবং খর্বাকৃতি লোক ।
  3. কৃঞকেশ , দৃঢ় পেশী এবং রক্ত প্রধান ধাতু।

আর্ণিকা মন্টের প্রয়োগ ক্ষেত্র বা লক্ষণঃ-

যে কোন রূপ আঘাতজনিত ব্যথা বেদনা, থেতলানো ব্যথা, আঘাত জনিত যে কোন পীড়া, ভ্যাদাল ব্যথা, দৈহিক বা মানসিক যন্ত্রাদির স্বাভাবিক ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যবহার, যেমন অধিক দূর হেঁটে যাওয়া, অতিরিক্ত বোঝা বহন করা। এছাড়া জ্বর ও সুতিকা জ্বর, গেটেবাত, বিসর্প, স্ফোটক, চক্ষুপীড়া, হুপিংকাশি, শিশু কলেরা , উদরাময় ও আমাশয়, পক্ষাঘাত ইত্যাদি পীড়ায় আর্ণিকা প্রয়োগ করা হয়। 

আর্ণিকা মন্টের রোগীকে যে কারণে প্রাকৃতিক ভাবে রোগে আক্রমণ করেঃ-

আঘাত লাগা, কোন স্থান থেকে পরে যাওয়া, মচকে যাওয়া, প্রহারে জর্জরিত প্রকৃতি কারণে ব্যথা বেদনা। ভ্যাদাল ব্যাথার কারনে। বহুদিন পূর্বের শারিরীক ও মানসিক আঘাত,  শোক দু:খ ভয়, ক্রোধ এবং আর্থিক ক্ষতি থেকে উদ্ভূত কোন নতুন পীড়া সৃষ্টি হলে। অত্যাধিক ইন্দ্রিয় বা যৌনাঙ্গ পরিচালনার কারণে বিভিন্ন রোগ হয়।( ARNICA MONTANA )

আর্ণিকা মন্টের বৃদ্ধি বা উপচয়ঃ-

স্পর্শে, চলাফেরায়, সামান্য দেহ সঞ্চালনে বা সামান্য নড়াচড়ায়, শৈত্যে বা শৈত্য প্রবাহে, ঠান্ডায় বা ঠান্ডা বায়ুতে অথবা জলীয় বায়ুতে স্যাতস্যাতে স্থানে, আঘাতে পরিশ্রমে, বামদিকে দীর্ঘক্ষণ শয়নে, নিদ্রার পর এবং মধ্যপানে। ( ARNICA MONTANA )

আর্ণিকা মন্টের উপশম বা হ্রাসঃ-

শয়ন করলে, বিশ্রামে, মাথা নিচু করে শয়নে, খোলা মুক্ত বাতাসে, সন্ধ্যাকালে, রাত্রিতে, পার্শ্ব পরিবর্তনে।

আর্ণিকা মন্টের অনুপূরক ঔষধঃ-

অ্যাকোনাইট, ইপিকাক, আর্সেনিক, বেলেডোনা, চায়না, ক্যালকেরিয়া কার্ব, বেলিস পেরেনিস, হাইপেরিকাম, পাইরোজেনিয়াম, নেট্রাম সালফ, রাসটক্স, সোরিনাম, ভিরেট্রাম এলবাম।

টাইফয়েড জ্বরে আর্ণিকা মন্টের লক্ষণাবলীঃ-

টাইফয়েড জ্বরে রোগী অজ্ঞান অচৈতন্য অবস্থায় পরে থাকে, একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকে ও অসারে মল-মূত্র ত্যাগ করে, মলে ও নিশ্বাসে পচা ডিমের দুর্গন্ধ। নীচের চোয়াল জুলে পরে, শ্বাস প্রশ্বাসে নাকে ঘরঘর শব্দ করে। আশাহীনতা, উদাসীনতা, কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করলে? উত্তর দেয় ভালো আছি।  দেহে ক্ষতবৎ ব্যথা বেদনা, তাই কাহাকেও গায়ে স্পর্শ করতে দেয় না। রোগী ক্রমাগত গত এপাশ ওপাশ করে। বিছানাটি বড়ই শক্ত মনে হয়। রাতে অম্ল ঘাম হয়, জিহবার মধ্যভাগে কালো বা বাদামি রেখার দাগ,  গায়ে স্থানে স্থানে কালো শিরার দাগ। মুখ গাঢ় লাল দেখায়, শরীরের উপরের অংশ গরম, কিন্তু হাত পা ও দেহের অন্যান্য অংশ অপেক্ষা কৃত ঠান্ডা। ( ARNICA MONTANA )


বিশেষ প্রয়োজনে যোগাযোগ



Post a Comment

1 Comments