এপিস মেলিফিকার দ্বিতীয় পাঠ
![]() |
Apis malefica |
এই পর্বে এপিস মেলের ব্যবহার সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানবোঃ-
যেমন- এই পর্বে আমরা জানবো যে, এপিস মেলের রোগীচিত্র, মূত্রযন্ত্রের পীড়ায় িএপিস মেলের ক্রিয়া বা লক্ষণাবলী, জ্বালায় অথবা প্রদাহে এপিস মেলের লক্ষণাবলী, এপিস মেলের বিসর্প বা চর্মরোগের লক্ষণাবলী ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
এপিস মেলিফিকার রোগীচিত্রঃ-
(১) নিদ্রালুতা ঘর্ম এবং প্রস্রাব ইত্যাদি স্রাবের স্বল্পতা, প্রস্রাব কষ্টকর ও ঘোর রক্ত বর্ণের, প্রস্রাবের বেগ ধারণে অসমর্থ এবং সে সাথে প্রস্রাবে জ্বালা। মাঝে মাঝে রক্ত প্রস্রাব বা প্রস্রাব লাল।
(২) কোন কোন পীড়ায় পিপাসাহীনতা, ক্ষুধাহীনতা , শোথ, উদরী।
(৩) চোখের নীচে থলির মতো ফোলা, দেহের নানা স্থানে ফোলা, দেহে হুলফোটানোর মতো বেদনা এবং বেদনার পরক্ষণেই জ্বালা ও টাটানিভাব। প্রদাহিত স্থানে স্পর্শকাতরতা,জ্বালা, পানি জমা ও সুচবিদ্ধবৎ বেদনা। বেদনা পর্যায়ক্রমে আসে , হঠাৎ আসে অল্প মাত্রা থাকে ও অত্যান্ত যন্ত্রনা দিয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে সরে যায়।
(৪) ডানদিকে অধিক ক্রিয়া প্রকাশ করে, পীড়া ডানে আরাম্ভ হয়ে বামদিকে যায়।
(৫) অত্যন্ত ঈর্ষাপরায়ন , কলহপ্রিয়, রোগী সহজে কেঁদে ফেলে। ইহা অভিমানের কান্না নয়, ত্রুদ্ধতার কারণে কেঁদে ফেলে,হাত থেকে জিনিষ পত্র পড়ে যায় , শিশু প্রস্রাবের পূর্বে কাদে।
(৬) অত্যন্ত গরম কাতর, তাই শিশু ও বয়স্করা গায়ে কোন আবরণ রাখতে চায়। দেহে আঁটসাঁট কাপঢ় পরিধান করে না। জিহবা আগুনের মতো টকটকে লাল।
(৭) কোন মানসিক আঘাতের ফলে ডানদিকে পক্ষাঘাত।
(৮) বিকার বা অন্যান্য পীড়ায় নিদ্রিতাবস্থায় বা নিদ্রা- ভঙ্গ কালে রোগী উচ্চস্বরে চিৎকার করে উঠে।
(৯) অঞ্জান অবস্থায় দেহের এক পার্শ্ব কেঁপে উঠে অপর অংশ স্থীর থাকে। মাথা এদিক ওদিক করে , মাথায় হাত দিয়ে থাকে।
(১০) গরমে,দুপুরে ও বৈকাল ৩-টা থেকে ৫-টার মধ্যে , উত্তপ্ত ঘরে জ্বর আসে অথবা সকল রোগ লক্ষণের বৃদ্ধি। ঠান্ডায় , শীতল বায়ুতে , ঠান্ডা পানিতে গোসলে এবং ঠান্ডা প্রয়োগে সকল রোগ লক্ষণের উপশম।
(১১) কোন কোন পীড়ায় রোগীর গায়ের চামড়া মোমের মত সাদাটে।
(১২) মহিলাদের গর্ভসঞ্চারের প্রথম দিকে গর্ভ পাত এবং শেষের দিকে ঈডিমা। পুরুষদের ডান অন্ডাদ্বার ,স্ফীত , জ্বালা এবং হুল বিধার মতো বেদনাযুক্ত।
(১৩) পেটে গ্যাস জমে ঢাকের মতো ফুলে যায় এবং পেট স্পর্শ কাতর।
মূত্র যন্ত্রের পীড়ায় এপিস মেলের ক্রিয়া বা লক্ষণাবলীঃ-
- মুত্র নালীতে জ্বালা , প্রস্রাবের সময় জ্বালা , হুল ফোটানো ব্যথা বেদনা।
- ঘন ঘন মূত্র বেগ , মূত্র বের হতে চায় না।
- অনেক কোথের পর ২-৪ ফোটা বের হয়।,মূত্রটি অত্যন্ত গরম।
- প্রস্রাবের শেষ ফোটাটি বের হওয়ার সময় আরও জ্বালাকর চিরিক মারা ব্যথা।
- শিশু প্রস্রাবের পূর্বে কেঁদে উঠে ,পিপাসা থাকে না, তন্দ্রার সাথে স্নায়ুবিক চাঞ্চল্য ।
- স্বল্প ও কষ্টকর মূত্রের জন্য শোথ দেখা দেয়।
- চোখের নিচে থলীর মতো শোথ।
জ্বালায় অথবা প্রদাহে এপিস মেলের লক্ষণাবলীঃ-
হুলফোটানো বা সুচবিদ্ধ ব্যথা বেদনা ফোলা, ফোলা স্থান লাল বর্ণ , তা যেখানেই হোক,গলায় মলদ্বারে, অর্শে , আঙ্গুল হাড়ায়, ক্যান্সারে, ডিপথিরিয়ায় ইত্যাদিতে জ্বালা ও প্রদাহ এবং জ্বালার সাথে শোথ । জ্বিহবার গোড়ার সমস্ত স্থানে ফোলা ও জ্বালা। গলনালীর সংকোচন ভাব ও হোল ফোটানো ব্যথা বেদনা ও জ্বালা । আল জ্বিহবা , টনসিল ও গলার ভিতর ও বাহির ফোলে ক্ষত । গলায় মাছের কাঁটা ফুটেছে এরুপ অনুভব এবং জ্বালা করে। এপিস মেলের চামড়ায় ফোস্কাগুলিতে জ্বালা ও দেহেও জ্বালা করে।
এপিস মেলের বিসর্প বা চর্ম রোগের লক্ষণাবলীঃ-
এপিস মেলের চর্ম রোগের স্থানে চামড়ায় জ্বালা, ফোলা, প্রদাহ , সুচবিদ্ধবৎ ব্যথা বেদনা , ফোলা স্থান লাল বর্ণ হয়, অত্যন্ত স্পর্শ কাতর । চর্ম রোগ , চর্মের ফোস্কা ডান পার্শ্ব থেকে আরাম্ভ হয়ে বাম দিকে যায়। পিপাসাহীনতা ও চর্ম পীড়ার সাথে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। আক্রান্ত স্থান ফোলে শোথ হয়, শোথে টিপলে টোল পড়ে। তাতে হুলফোটানো ব্যথা ও জ্বালা । চোখের নিচে পানি জমে থলির মতো ফোলে যায়। চর্মের উপসর্গে ও চর্মরোগে , বিসর্পে গরম বা গরম পানি অসহ্য , ঠান্ডা প্রয়োগে , ঠান্ডা পানিতে উপশম।
0 Comments