AETHUSA CYNAPIUM
ইথুজা সাইনাপিয়াম এর বিস্তারিত
ইথুজা গাছের বা গাছড়ার বর্ণনাঃ ইথুজা অ্যামবেলিফেরি জাতীয় উদ্ভিদ। ইহা একটি তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত, বিষাক্ত বর্ষজীবি আগাছা। ইথুজা গাছটির মূল অনেক গুলো শিকর বিশিষ্ট, সাদা এবং নীচের দিকে ক্রমশঃ সরু হয়ে গিয়েছে। পাতাগুলি উজ্জল সবুজ বর্ণের , কখনও কখনও পাতা আংশিক লাল রঙ্গে রজ্ঞিত। গাছটির ডাটাগুলি খাড়া হয় । ইহার মূল টেকো আকারের এবং ইহার স্বাদ খুবই ঘৃণাজনক ও বিরক্তিকর । জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে গাছে সাদা ফুল ফোটে। সমগ্র টাটকা গাছটি নিংড়িয়ে রস সংগ্রহ করে ঔষধে ব্যবহ্রত হয়।(aethusa cynapium)
ইথুজার জন্মস্থানঃ ইউরোপের সর্বত্র ইথুজার গাছগুলি জন্মে ।
ইথুজার প্রুভারঃ ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ডাঃ নেনিং ( Dr. Nening ) ইথুজা প্রুভ করেন।
ইথুজার সমনামঃ ডগ পয়জন, কুকুরের বিষ, ডগ পার্সলি , গার্ডেন হেমলক বা বাগানের হেমলক বিষ,লেসার হেমলক, বোকার শাক, ফুসল পার্সলি ইত্যাদি।
ইথুজার বা ইথুজা ঔষধের প্রস্তুত প্রণালী
প্রস্তুত প্রণালীঃ পুষ্পিত অবস্থায় সম্পূর্ণ তাজাগাছ সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ গাছ থেকে রস নিংড়িয়ে সংগ্রহ করা হয়। উদ্ভিদ রসের দ্বিগুন পরিমান বিশুদ্ধ সুরাসার মিশ্রিত করে মূল আরক বা অরিষ্ট অর্থাৎ মাদার টিংচার ( Mother Tinchure ) প্রস্তুত করা হয়। ১-ভাগ মূল অরিষ্ট বা আরক , ৩-ভাগ পরিসূত পানি এবং ৬-ভাগ বিশুদ্ধ সুরাসার মিশ্রিত করে ইথুজার বা ইথুজা ঔষধের ২X-শক্তি প্রস্তুত করা হয়। হোমিওপ্যাথিক ফার্মাকোপিয়ার নিয়ম অনুসারে পরিসূত সুরাসার মিশ্রিত করে ইথুজার ৩X-শক্তি এবং ইহার উচ্চ শক্তি তৈরী করা হয়।(aethusa cynapium)
ইথুজার রোগীর ধাতুগত লক্ষণ বা দৈহিক কাঠামো
১) ইথুজার রোগী গরম কাতর । ২) রোগ যখন বৃদ্ধি পায় ও রোগের চরম অবস্থায় তিনটি মায়াজমেরই, যেমন- সোরা , সিফিলিস ও সাইকোসিসের মিশ্রিত লক্ষণ লক্ষ্য করা যায়। ৩) দাত উঠার সময় শিশুদের বিভিন্ন রোগ লক্ষণ দেখা দেয়। ৪) শিশুদের দুধ অসহ্য লাগে। ৫) মৃদু প্রকৃতির উদর পীড়া। ৬) হিক্ক, মৃগী, মস্তিকের ক্লান্তি লক্ষণসহ পৈত্তিক সান্নিপাতিক অবস্থা।
ইথুজার নির্দেশক বা চরিত্রগত লক্ষণাবলী
* যে কোন রোগের সাথে পিপাসাহীনতা কিন্তু ক্ষুদা বেশী। * দুধ বা দুধে তৈরী কোন খাবার শিশুর অসহ্য । শিশু দুধ পান করলে দুধই বমি করে। * দাত উঠার সময় বা গরমকালে শিশুদের অবসন্নতার সাথে সাথে বিভিন্ন রোগ হয় । * অত্যন্ত দুর্বলতা , মাথা তুলতে পারে না। * তরকা , মৃগীর মত খিচুনি , হাতের বুড়ো আঙ্গুল মুষ্ঠিবদ্ধ ও নাড়ী দ্রুত শক্ত হয়। * সকল জিনিসকে স্বাভাবিক আকারের থেকেও বড় মনে হয়। * জিহবা অতিরিক্ত লম্বা মনে হয়। * রোগীর বিশেষত হিস্টিরিয়ার রোগীরা মনে করে ঘরের মধ্যে বিড়াল, কুকুর, ইঁদুর ইত্যাদি জাতীয় প্রাণী দৌড়াচ্ছে । * অচেতন অবস্থায় শুয়ে থাকে অন্ধকারে মনে হয় দম বন্ধ হয়ে যাবে। * মা শিশুকে কোলে না নেওয়া পর্যন্ত বুঝতেই পারে না শিশু রোগাক্রান্ত হয়েছে। * রোগীদের পশুদের প্রতি অসম্ভব ভালোবাসা। * পশু-প্রাণীদের সাথে কথা বলে, যত্ন নেয়।
রাত তিনটা থেকে চারটার মধ্যে বৃদ্ধি, প্রাপ্ত কালে, সন্ধ্যায়, বৈকালে, গরমে, গ্রীষ্মকালে, পানাহারের পর, দুধপানে, নতুন দাঁত উঠিবার সময়, বমি, ভেদ-বাহারে,আক্ষেপান্তে ইত্যাদি।
বিশুদ্ধ ও স্নিগ্ধ এবং মুক্তবাতাস সেবনে, সঙ্গী-সাথী বা বন্ধু-বান্ধবীর সাথে মিলামিশায় খুশি মনে আমোদ আল্লাদে থাকলে। নিদ্রা শেষে পশ্চাত দিকে অবনত হলে। (aethusa cynapium) ইথুজা ঔষধের প্রয়োগ ক্ষেত্র বা কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে ইথুজা ঔষধ প্রয়োগ করা হয়
শিশুদের গ্রীষ্মকালীন উদরাময়ে, যাদের দুধ সহ্য হয় না, বিশেষতঃ শিশুদের দুধ হজম না হলে । বমন, হিক্কা ,মৃগী, মস্কিষ্কের ক্লান্তি ও মস্তিষ্কেরে লক্ষণসহ পৈতিক সারন্নিপাতিক অবস্থায়, এবং মৃদু প্রকৃতির উদর পীড়া ইত্যাদিতে ইথুজা প্রয়োগ করা হয়।(homeo medicine aethusa)
বি দ্র ঃ উপরে উল্লেখিত লক্ষণ ছাড়াও আরো বিভিন্ন লক্ষণে এই ইথুজা ব্যাবহার করা হয়ে থাকে।
|
0 Comments